“সম্মানিত সেই প্রধান  শিক্ষককে অসম্মানিতভাবে বক্সখাটের ভিতর থেকে আটক করা হয়েছে”  

Date:

Share post:

আসাদ তালুকদারঃ শুক্রবার(২৮ জুন) প্রশ্নফাঁস চক্রের বিরুদ্ধে এক সাড়াশি অভিযান চালায় নেত্রকোণা জেলা পুলিশ এর একটি চৌকস দল। এতে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাজাহান মিয়া। অভিযানের বিষয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন,                  ”  উনি হলেন একজন শ্রদ্ধেয় (!!?) প্রধান শিক্ষক, বলাইশিমুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা জনাব (!!) মোঃ আব্দুল মান্নান @ ছোটন। যে শিক্ষক জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যতদের মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার কাজ করবেন, তিনি নিজে এবং অন্য আরেকদল শিক্ষকদের নিয়ে প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করেন। এই চক্র গত 5/6 বছর ধরে এই কাজ করে আসছেন, এবং এই প্রক্রিয়ায় অনেকেই শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়ে ‍দিব্যি চাকরী করছেন।
তাদের অপরাধের কৌশল (Modus Operendi): অপরাধী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান @ ছোটন সহ 8/10 জন শিক্ষক প্রার্থীদের সঙ্গে চুক্তিতে আসেন লিখিত পরীক্ষার 80 নম্বরের মধ্যে minimum 75 পাইয়ে ‍দিবেন। এই চক্রের আরেকদল শিক্ষক হলেন তারা যারা পরীক্ষার হলে ডিউটিরত। তাদের ডিউটি হলো হলে নকলমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখা অথচ তারা করেন তার ঠিক উল্টোটা। তারা পরীক্ষা শুরু হবার 2/3 মিনিটের মধ্যেই প্রশ্নটির ছবি তুলে দ্রুত FB Messenger এর মাধ্যমে দুরের একটি নিরাপদ বাড়িতে (Safe home) পাঠিয়ে দেন, প্রশ্ন সরবরাহের সাথে প্রশ্ন-কোডটিও পাঠান (যমুনা-5124)। সেই নিরাপদ বাড়িতে  রয়েছে 10/12 জন শিক্ষক সহ 8/10জন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে ও IT Expert সহ 20/25 জনের একটি দল। সেই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান @ ছোটন। তারা হল থেকে Messenger এর মাধ্যমে ছবি আকারে প্রশ্ন পাবার সঙ্গে সঙ্গে (10/12 মিনিটের মধ্যে) উত্তরপত্র রেডি করে ফেলেন এবং ফেরত মেসেজের মাধ্যমে দ্রুত আবার তা কেন্দ্রে ডিউটিরত ঐ শিক্ষকদের কাছে পৌছে দেন। কেন্দ্রের শিক্ষকগণ(!!) সেই উত্তর পত্র (1-ক, 2-গ, 3-খ. . . 80 পর্যন্ত)  অত্যন্ত সযত্নে নির্ধারিত পরিক্ষার্থীদের হাতে পৌছেদেন যাদের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছে। শুধু পৌছে দিয়েই কিন্তু তাদের দায়িত্ব শেষ হয়না বরং সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে (অন্য শিক্ষক যারা এই চক্রের বাইরে তারা কেউ যাতে ঐ পরিক্ষার্থীকে ডিস্টার্ব না করেন) এর জন্য পাহারা দিতে থাকেন। আর এভাবেই তাদের মিশন সম্পন্ন হয়।
বিনিময়ে পেয়ে যান চুক্তিমূল্য যা থেকে চক্রের সকল সম্মানিত সদস্যদের সম্মানী বন্টন করা হয়। গত 5/6 বছর এভাবেই হয়ে আসছিল কিন্তু এবার বাদ সাধলো বেরসিক পুলিশ !! নেত্রকোণা জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ), সার্কেল এএসপি, ওসি সহ থানা পুলিশের চৌকস একটি দল। এ চক্রের মোট 32 জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকীদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন,2018 সহ পাবলিক পরীক্ষা অপরাধ আইন,1980 মোতাবেক মামলা রেকর্ড করা হয়েছে যার শাস্তি 5-7 বছর জেল ও 5 লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। আমাদের তরফ থেকে যতদুর সম্ভব করেছি বাকীটা আদালত বুঝবে। ধন্যবাদ সবাইকে।
ও!! সম্মানিত সেই প্রধান শিক্ষককে বক্সখাটের ভেতর থেকে জাজিম ও তোষকের নীচ থেকে একটু অসম্মানিত ভাবে আটক করা হয়েছে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

Related articles

সড়ক দূর্ঘটনায় পূর্বধলার মেধাবী ছাত্র তানভীর নিহত

পূর্বধলা প্রতিনিধিঃ স্বপ্ন দেখতেন একদিন অনেক বড় হবেন। বাবা-মা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবেন। ছিলেন প্রচণ্ড পরিশ্রমী...

পূর্বধলায় যৌথ অভিযানে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার, আটক ৫

শিমুল শাখাওয়াতঃ নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার জালশুকা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ম্যাগজিনসহ একটি নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর...

পূর্বধলায় মাছ ধরা কে কেন্দ্র করে নিহত ১

মোঃ শাখাওয়াত হোসেন শিমুলঃ নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মেঘশিমুল পশ্চিমপাড়া গ্রামে গতকাল শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত...

পূর্বধলায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পালিত

মোঃ শাখাওয়াত হোসেন শিমুলঃনেত্রকোনার পূর্বধলা সার্বজনীন পূজা মন্দির এর উদ্যোগে সোমবার পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রা ও আলোচনা...