বাবলী আকন্দ ঃ প্রতিবন্ধীরা এখন বোঝা নয়। বর্তমান সরকারের সহায়তায় এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠী দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অবদান রাখছে। প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের যে লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন ডেল্টা প্ল্যানের ১৭ নং অনুচ্ছেদে সেখানে এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য বাসগৃহ নির্মান করার নির্দেশনার পাশাপাশি অধিকার, সামাজিক উন্নয়নের কথা স্পষ্ট করে লেখা আছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করে আগামীর ২০৪১ সালের লক্ষ্য অর্জনে আমাদের সবার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারত্বের মাধ্যমেই অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অবদান রাখা উচিত। আজ ৬ নং চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে
অগ্রদূত ও উত্তরন প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর আয়োজনে কমিউনিটি বেইজড রিহেবিলিটেশন ফর ডিজ্যাবল পিপল( সিবিআরডিপি) প্রকল্পের ফেইজ ওভার অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টার (পিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. অঞ্জন কুমার চিছাম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ হাফিজুর রহমান।
এসময় তিনি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ভাইবোনদের সফলতা তুলে ধরে বলেন, গত ২০০৭ সালে যারা হুইল চেয়ার পার্সন তারা আন্তর্জাতিক ভাবে খেলায় অংশ নিয়ে বিজয় অর্জন করার মাধ্যমে দেখিয়েছে যে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ভাইবোনেরা বোঝা নয় আর তারা মুষ্টিমেয় নয়। সকল প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে।
উল্লেখ্য, শেষ হচ্ছে সিবিআরডিবি এর প্রকল্প। গত ২০০৬ সালে ট্রান্সফরম এইড ইন্টারন্যাশনাল এর অর্থায়নে প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টার (পিসিসি) চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নের প্রতিবন্ধীদের নিয়ে (সিবিআরডিপি) প্রজেক্ট শিরোনামে কার্যক্রম শুরু করে। ২০১১ সালে কর্ম এলাকায় ৪৮ টি স্বাবলম্বী দল নিয়ে ২ টি ডিজ্যাবল পিপলস অর্গানাইজেশন (ডিপিও) গঠন করে সেখানে প্রতিবন্ধীতা বিষয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত করে।
সিবিআরডিপি প্রকল্পের শুরুতে চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নের অনেক প্রতিবন্ধী ভাইবোনেরা থেরাপি সেবা নেয়ার জন্য প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টার (পিসিসি) এর এখানে যেত। সেখানে তারা বারবার তা সম্প্রসারণের জন্য অনুরোধ জানাতেন। তাদের সামাজিক অবস্থান জানার জন্য পিসিসি ট্রান্সফরম এইড ইন্টারন্যাশনাল (টিএআই) এর নিকট গ্রেন্ড ফান্ডের আবেদন করে। ২০০৫ সালে পিসিসি ফান্ড পেয়ে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে পিআরএ করে। পিআরএ করে দেখা যায়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিষয়ে সমাজে কুসংস্কার প্রচলিত ছিল। তারা প্রতিবন্ধীতাকে অভিশাপ মনে করতো। প্রতিবন্ধী সন্তানদের পরিচয় দিতে অভিভাবকগন লজ্জা পেতেন তাই তাদেরকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখতেন।
কিন্তু এ প্রকল্পের আওতায় এসে পুরো চিত্রটাই পালটে গেছে। পালটে গেছে প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের জীবন। তারা এখন ঘর থেকে বের হয়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে যুক্ত হয়েছে। তারাই এখন তাদের অনুষ্ঠান পরিচালনা করে থাকে। তাদের আত্মবিশ্বাস থেকে শুরু করে শিক্ষা,চিকিৎসা সহ বিভিন্ন বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ৩ বছরের জন্য অগ্রদূত ডিপিও হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল এ উইমেন ইন্টিগ্রেটেড সেক্সচুয়াল এন্ড রিপ্রডাক্টিভ হেলথ(উইশ) প্রজেক্ট শিরোনামে কাজ শুরু করার চুক্তিসই করেছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৩১,৩২ ও ৩৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর ফারজানা আক্তার কাকলী, তমা চক্রবর্তী, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোর্শেদুল আলম জাহাঙ্গীর, পিসিসির প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর রাজন বীন প্রমূখ।