নেত্রকোনা, পূর্বধলা প্রতিনিধিঃ
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকালে নেত্রকোনার জেলার পূর্বধলার জারিয়া এবং দুর্গাপুরের ঝাঞ্জাইলে ভোগাই-কংশ নদীর খনন কাজ উদ্বোধন করেছেন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের পরিবহণ সেক্টরে নৌ-পরিবহন ব্যবস্থা একটি সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও পরিবেশ বান্ধব যোগাযোগ মাধ্যম। নাব্যতার সংকটের কারণে ধীরে ধীরে ঐতিহ্যবাহী নৌ-পথগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। নৌ-পথের নাব্যতা ফিরিয়ে এনে দেশের আবহমান ঐতিহ্য পুনঃরুদ্ধারসহ সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধিন সরকার দশ হাজার কিলোমিটার নৌ-পথ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
উদ্বোধনের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন , সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীরপ্রতীক, সংসদ সদস্য মানু মজুমদার, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব উল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী।
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ হতে শেরপুরের নালিতাবাড়ি পর্যন্ত ভোগাই-কংশ নদীর ১৫৫ কিলোমিটার নৌপথে এক কোটি ঘনমিটার মাটি খনন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এজন্য ব্যয় হবে ১৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
পাঁচটি কোম্পানি যথা-বসুন্ধরা ইনফ্রাস্টাকচার ডেভলাপমেন্ট লিমিটেড, সোনালী ড্রেজার লিমিটেড, বিডিএল- এসআরডিসি, এস এস রহমান- মাতৃবাংলা এবং নবারুন ট্রেডার্স লিমিটেড মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, পূর্বধলা, ফুলপুর, নালিতাবাড়ি উপজেলায় খনন কাজ করবে । উল্লেখিত স্থানে প্রস্থে ৮০ থেকে ১০০ ফুট এবং গভীরতায় ৮ ফুট খনন করা হবে। খনন কাজ ২০১৯ এর মে থেকে শুরু হয়ে ২০২১ এর জুন পর্যন্ত চলবে।
নৌ-পথে সার্বক্ষণিক নির্বিঘ্নে কার্গো/ নৌ-যান চলাচল অক্ষুন্ন রাখার নিমিত্তে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নৌ-পথটির নাব্যতা ফিরিয়ে এনে এ অঞ্চলের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিএ “অভ্যন্তরীণ নৌ-পথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং (১ম পর্যায়: ২৪টি নৌ-পথ)” শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে শুস্ক মৌসুমে ৮ ফুট গভীরতা রাখার জন্য খনন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ নৌ-পথটি খনন করা হলে এতদাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং কৃষি কাজে ও মৎস চাষে ব্যাপক উন্নতি ঘটবে।
উল্লেখ্য, ২৪টি নৌ-রুটের মধ্যে মোংলা- ঘাষিয়াখালি- বরগুনা (এম-জি ক্যানেল), বরিশাল- পটুয়াখালি (লাউকাঠি, সাহেবের হাট নালা, কারখানা), সৈয়দপুর- বান্ধুরা (ইছামতি), মিরপুর- সাভার (কর্ণতলী), বাঁকখালি নদী, ভোলা নালা ও মানিকদা- বরদিয়া- খুলনা (মধুমতি) ৭ টি রুটের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ভৈরব- ছাতক- ভোলাগঞ্জ (সুরমা, বাউলাই, নতুন), দুর্লভপুর- আনোয়ারপুর- তাহেরপুর- বিশ্বম্বপুর (যাদুকাটা ও রক্তি), গাগালাজোড়- মোহনগঞ্জ- শেরপুর (কংশ, ভোগাই-কংশ), দিলালপুর- ঘোড়াদিঘা- চমাড়াঘাট- নিকলি- নেত্রকোনা (মোগরা), মনুমুখ- মৌলভীবাজার (মনু), চিত্রি- নবিনগর- বুড়ি (পাগলা, বুড়ি), নরসিংদী- বেলাবো- কটিয়াদি (পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, আড়িয়াল খাঁ), নরসিংদী- সলিমগঞ্জ- বাঞ্চারামপুর- হোমনা (তিতাস), দাউদকান্দি- হোমনা- রামকৃষ্ণপুর (তিতাস), চাঁদপুর- ইচুলি- হাজিগঞ্জ- লাকসাম (ডাকাতিয়া), পঞ্চগড়- দিনাজপুর- নওগাঁ- নাটোর- পাবনা (আত্রাই), হোসনাবাদ- টর্কি (পালরদি), বিজিমাউথ- তুলশিখালী- হযরতপুর- ঘিউর (ধলেশ্বরী, কালিগঙ্গা), মেঘনা- লাঙ্গলবন্ধ (ব্রহ্মপুত্র), দুধকুমার নদী, নোয়াপাড়া- খুলনা (ভৈরব) ও (সিন্দিয়াঘাট- ভাঙ্গা (আপার কুমার) ১৭টি রুটের ড্রেজিং কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ৬১.৫০% । এ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে প্রায় ৯৭০ কিলোমিটার নৌ-পথ নাব্য করা হয়েছে।