পরশ মির্জা ঃ রমজান মাস সংযমের মাস। মুসলমানদের জন্য এক তাৎপর্যপূর্ন মাস। পার্থিব লোভ-লালসা থেকে দূরে থাকা, অন্যায় কাজ থেকে দূরে থাকা, নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকা, ভোগবাদিতা থেকে দূরে থাকা, স্বীয় নফস্ বা অাত্মাকে পরিশুদ্ধ করার মাস এই রমজান মাস।
কিন্তুু বাস্তব চালচিত্র কি? অামরা লোভ-লালসা এবং অন্যান্য নেতিবাচকতা থেকে কতটুকু দূরে থাকি? এ মাসে যেন অামাদের চাই চাই, খাই খাই, পাই পাই অর্থাৎ লোভের মাত্রাটা বেড়ে যায় বহুগুনে। ঘুষখোরের ঘুষের, সুদখোরের সুদের মাত্রা বেড়ে যায়। কমিশনভোগীর কমিশনের হার বেড়ে যায়। চাঁদাবাজের চাঁদাবাজি, ধান্দাবাজের ধান্দাবাজি বেড়ে যায় মাত্রাতিরিক্ত। হয়ে পড়ে মরিয়া। ফলে সরকারকেও নিতে হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিত্তবানরা অায়োজন করে ভুড়িভোজনের। অায়োজন চলে ইফতারের নামে পার্টির পর পার্টির। যেন উৎসবের মাস। অথচ চোখের সামনে ক্লায়কেশে জীবনযাপন করে অসহায় গরীব মানুষেরা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম তো হয়ে পড়ে অাকাশচুম্বী। ব্যবসায়ীরা মনে করে রমজান মাসই যেন তাদের অধিক মুনাফা অর্জনের মাস। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে উঠে প্রবলভাবে। ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের জন্য হয়ে পড়ে ব্যতি-ব্যস্ত। ভাব দেখে মনে হয় এ মাসটির জন্যই যেন তারা প্রতীক্ষায় থাকে চাতক পাখির মত। ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা লাভের অাকাঙ্খার কারণে নাভিশ্বাস উঠে সাধারন মানুষের। ক্রয়-ক্ষমতা লোপ পায় চরমভাবে।
সংযমের মাসে অসংযম কর্মকান্ডের নেতিবাচক প্রভাবে জর্জরিত হয় সাধারন মানুষ। উড়তে থাকে টাকা। সে টাকার পানে লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মত ছুটতে থাকে অতিলোভীরা।
সংযমের মাস, অাত্মশুদ্ধির মাস রমজান মাসের চালচিত্র কি এমনটি হওয়ার কথা? অবশ্যই নয়। তবুও কেন নেতিবাচক চালচিত্র এ মাসে দৃশ্যমান বেশিই হয়? নেতিবাচক চালচিত্র দৃশ্যমান হওয়ার কারণ রমজান মাসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অামাদের উপলব্ধিতে থাকে না। থাকে শুধু রমজানের বাহ্যিকতা। ফলে অামাদের অামলে চরম ঘাটতি। রমজান মাসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য উপলব্ধি ও অামলে না নিলে নেতিবাচক চালচিত্র দূরীভূত হবে না। যা কাম্য নয়।