পূর্বময় ডেস্ক ঃ রোজা মুসলিমদের উপর ফরজ করা হলেও অনেকেই নানা কারনে রোজা রাখতে পারেন না! রোজা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমনিভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যাতে তোমরা মু্ত্তাকি হতে পার। নির্দিষ্ট কিছু দিন। তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ হলে অথবা সফরে থাকলে তার সময় অন্যান্য দিন।(সূরা বাকারা:১৮৫)
তবে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা যা হতে ভালো হওয়ার আশা করা যায় না ও রোজা রাখা একে বারেই অসম্ভব। এমন অসুস্থ ব্যক্তিদের রোজা রাখা জরুরি নয়। তারা প্রতিটি রোজার পরিবর্তে প্রতিদিন একজন করে মিসকিনকে খানা খাওয়াবে। তাদেরকে রোজার কাজা করতে হবে না।
এমন বৃদ্ধ ব্যক্তি যিনি রোজা রাখতে সম্পূর্ণ অক্ষম তার জন্য রোজা রাখা ওয়াজিব নয়। সে প্রতিটি রোজার পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খানা খাওয়াবে তাকে রোজার কাজা করতে হবে না। (বার্ধক্যে উপনীত ব্যক্তির চেতনা যদি একেবারেই অবশিষ্ট না থাকে তার উপর কোন কিছুই ওয়াজিব হবে না)
রোজার কারণে যদি অসুস্থ ব্যক্তির ক্ষতি, আরোগ্য লাভ বিলম্বিত কিংবা অসুস্থতা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে তার জন্য রোজা না রাখাই উত্তম। কারণ, আল্লাহ তায়ালা পরম দয়ালু। তিনি তার বান্দাদের কোন কষ্ট দিতে চান না। তাদের কষ্টের প্রতি লক্ষ্য রেখেই আল্লাহ তাদের রোজা না রাখার অনুমতি দিয়েছেন।
সফরের দূরত্ব আশি কিলোমিটার। পূর্বেকার যুগে মানুষ পায়ে হেঁটে অথবা উটের পিঠে চড়ে স্বাভাবিক গতিতে চললে দুইদিন দুইরাতে আশি কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারত। তাই আশি কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর একজন ব্যক্তি মুসাফির হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে হঠাৎ সফর করা এবং যারা সবসময় সফরে থাকে তাদের মধ্যে কোন প্রার্থক্য নেই। সুযোগ সকলের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য। যেমন গাড়ী চালক সে এক দেশ থেকে অন্য দেশে সব সময় সফরে থাকে। সাভাবিকভাবেই সে সব সময় মুসাফির থাকবে এবং তার জন্য রোজা না রাখাই উত্তম।
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের রোজার কারণে যদি তাদের নিজেদের অথবা সন্তানদের ক্ষতির আশংকা হয় তাহলে তাদের জন্য রোজা রাখা ওয়াজিব নয়। তবে তারা যে ক’দিন রোজা রাখেতে পারেনি সে ক’দিনের কাজা করবে। আর যদি কোন নারী শুধু সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কায় রোজা হতে বিরত থাকে তবে তাকে কাজা করার সাথে সাথে প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খানা খাওয়াতে হবে।
এছাড়াও নারীদের পিরিয়ড চলাকালীন সময় রোজা রাখা জায়েজ নয়। তবে পরবর্তীতে তা কাযা রাখতে হবে।
পারতপক্ষে অসুবিধায় না পড়লে রোজা বা সিয়াম অবশ্যই পালন করতে হবে।