দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ ময়মনসিংহ জেলার উদ্যোগে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অগ্রসেনানী, মহামতি লেনিনের সুযোগ্য উত্তরসূরী জোসেফ স্তালিনের ৬৬তম প্রয়াণ দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হয় । এ উপলক্ষ্যে ৫ মার্চ-২০১৯ সন্ধ্যা ৬ টায় জে সি গুহ রোড, ময়মনসিংহে অবস্থিত মটরসাইকেল মেকানিকস ইউনিয়নের কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সহ- সভাপতি জুট মিল শ্রমিকনেতা শাহজাহান মিয়া। সভায় আলোচনা করেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন, নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন, ময়মনসিংহ (রেজিঃ নং-৩৬২৭) এর সাধারণ সম্পাদক মুখলেছুর রহমান ফরাজী, ময়মনসিংহ দর্জি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং-০০৪) এর সভাপতি আব্দুর রশিদ মিন্টু, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের মহানগর কমিটির সহ- সাধারণ সম্পাদক মোহাইমিনুল হক সজীব, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট জেলা কমিটির নেতা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদের জেলা সভাপতি বিমান সরকার প্রমুখ।
আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, মার্কসবাদ- লেনিনবাদী তত্ত্বের আলোকে মহামতি লেনিন ও বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে ফেব্রুযারী বিপ্লব ও নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে শ্রমিক শ্রেণীর একনায়কত্ব তথা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯২৪ সালে লেনিনের মৃত্যুর পর সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের হাল ধরেন লেনিনরই সুযোগ্য উত্তরসূরী মহান সেনানায়ক কমরেড স্তালিন। এসময় বিশ্ব পুঁজিবাদ- সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার মহামন্দার মধ্য দিয়ে ২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার উপক্রম। পুঁজিবাদী- সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহের আক্রমণের নিশানা হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। হিটলার- মুসোলিনির বর্বর আক্রমণ থেকে শ্রমিক শ্রেণীর রাষ্ট্র্রটি রক্ষা করা তথা ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে, বিশ্বযুদ্ধের বিরুদ্ধে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্টার জন্য বিশ্বের ঔপনিবেশিক দেশসমূহে জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব এবং পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহবান জানান জোসেফ স্তালিন । অপ্রতিরোধ্য বলশেভিকদের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ও স্তালিনের সুযোগ্য নেতৃত্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন রক্ষাসহ ২য় বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এশিয়া-ইউরোপের বিভিন্নদেশে জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন হয়।
নেতৃবৃন্দ তাঁদের আলোচনায় বলেন, শ্রমিক ম্রেণীর এই অগ্রসেনানীর সম্পর্কে মিথ্যাচারেরও কমতি নেই। বিশ্ব পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ তাঁকে চিহ্নিত করতে চায় স্বৈরশাসকরুপে। এর কারণ, বিশ্বের শোষিত মানুষের চোখে স্ট্যালিন হয়ে উঠছিলেন শোষণ মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক। অন্যদিকে পুঁজিবাদ- সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহের চোখে তিনি মৃত্যুর আতংকস্বরুপ। বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদ বুঝেছিলো, স্ট্যালিনকে কালিমালিপ্ত করতে না পারলে সাম্যবাদী আন্দোলনের অগ্রগতি আটকানো যাবে না, শোষণমূলক পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী নিষ্ঠুর ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখা যাবে না। তাই মিথ্যাচারের নিশানা বানানো হলো স্ট্যালিনকেই। স্ট্যালিনকে আঘাত করা ও কালিমালিপ্ত করার দ্বারা তারা শোষণ মুক্তির হাতিয়ার মার্কসবাদ- লেনিনবাদকেই নিশানা বানিয়েছে এবং নির্ভেজাল মিথ্যাকে প্রচারের জোরে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, স্ট্যালিনকে “দানব বা স্বৈরশাসক ” বলার জন্য কারো তথ্য ও প্রমাণের দরকার হয় না । ক্রুশ্চেভ সংশোধনবাদী ও ট্রটস্কিবাদীরাও মিথ্যাচারের এ পালে বাতাস দিয়ে যাচ্ছে।
মহান স্ট্যালিনের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা এদেশের শ্রমিক শ্রেণির সামনে তুলে ধরার মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণীর শোষণ মুক্তির আন্দোলন অগ্রসর করার আহবান জানান সভার আলোচক বৃন্দ।