নেত্রকোনা, পূর্বধলা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজনের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদ আলম টিপুর পক্ষে অবস্থান নিয়ে নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ, নৌকা প্রতিকের পক্ষে কাজ করা নেতাকর্মীদের ওপর তার ক্যাডার বাহিনীর অব্যাহত হুমকি ধামকি, সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা, মারধর, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বুধবার দুপুর ১টার দিকে পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম সুজন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন. বর্তমান সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে নৌকা প্রতিক দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার জন্য মনোনীত করার পর থেকেই সাংসদ বেলাল দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করে আমার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তার অনুগত মাসুদ আলম টিপুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে তার পক্ষে প্রচার প্রচারণা করেই কান্ত হননি।
তিনি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কিলার ও সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করে এনে কালো গ্লাসের মাইক্রোবাস ও মোটর সাইকেল বহর নিয়ে পূর্বধলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করা দলীয় নেতাকর্মীদের অব্যাহত প্রাণনাশের হুমকি ধামকি, নৌকার পক্ষের ব্যানার পোষ্টার ছিড়ে ফেলা, ২০টির মতো নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর ও তার ক্যাডার বাহিনীর সশস্ত্র হামলায় উপজেলা কৃষকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারা মিয়া, যুবলীগ নেতা প্রদীপ দাস, রাশেদুল, শহীদ ফকির ও আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েল গুরুতর আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
সাংসদ বেলাল তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাজলা গ্রামস্থ তার নিজ বাড়ীতে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পুলিশ অফিসারদেরকে ডেকে নিয়ে তার মনোনীত প্রার্থী টিপুর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।
তিনি নৌকার পক্ষের কাজ করা নেতাকর্মীদের ফোন করে হুমকি দিচ্ছেন, আনারসের পক্ষে কাজ না করলে তাদেরকে মামলা দিয়ে জেল খাটানো হবে। নৌকার পক্ষের নেতাকর্মীরা যাতে এলাকায় কোন ধরনের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাতে পারে তার জন্য তিনি কিছু সংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে এলাকায় চরম আতংক সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। সাংসদ বেলাল বিগত ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অনেক প্রার্থীকে পরাজিত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের বিরুদ্ধে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ, তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে নৌকার পক্ষের নেতাকর্মীদের হুমকি ধামকি, মারধর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করায় দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জোর দাবী জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোহালাকান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান হাসনাত জামান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন আকন্দ, পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন, এডভোকেট আজহারুল ইসলাম, মোয়াজ্জেম হোসেন, আইয়ুব আলী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চন্দন কুমার কুন্ড, শহিদুল ইসলাম সরকার, সারোয়ার হোসেন খোকন, লতিফ বিশ্বাস, এডভোকেট আব্দুল মান্নান প্রমূখ। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।