পরশ মির্জাঃ “চল যাই শহীদমিনারে ভাষা শহীদদের স্বরনে” এই প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে গণমূখী সংগঠন সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ, ময়মনসিংহ প্রতিবছরই শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আকুয়া মড়লপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে তাদের নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত শহীদ মিনারে যথাযোগ্য মর্যাদায় আগামী প্রজন্মের বিপুল সংখ্যক শিশু কিশোরদের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহনে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে থাকে। এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে শহীদদের স্মরণে আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করে। সংগঠনের পক্ষ হতে শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। শহীদ মিনার বেদীতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় আগামী প্রজন্মের বিপুল সংখ্যক শিশু কিশোররা।
শহীদ মিনার বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পন শেষে আগামী প্রজন্মের শিশুকিশোরদের সামনে তুলে ধরা হয় মহান ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ও এর গুরুত্ব। এরপর বের করা হয় ভাষা শোভাযাত্রা। ‘সর্বত্র বাংলা ভাষার সর্বোচ্চ প্রয়োগ চাই’ এই দাবীটিকে তুলে ধরে শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে আকুয়া মড়লপাড়ার বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় উত্থাপিত দাবী প্রসংগে সংগঠনটি মনে করে, মাতৃভাষার অন্তর্নিহিত উৎকর্ষতা সাধন সম্ভব কেবলমাত্র সর্বত্র এর যথাযথ প্রয়োগে। আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে ব্যক্তিগত জীবনাচার ও রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বত্র যথাযথ প্রয়োগেই এর সর্বোচ্চ উৎকর্ষতা নিহিত। মাতৃভাষার উৎকর্ষতা সাধনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে যেমন যথাযথ প্রায়োগিক পদক্ষেপ নিতে হবে তেমনি রাষ্ট্রের নাগরিকদেরকেও দায়িত্ব পালন করতে হবে। বাংলা ভাষা রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত অফিস, আদালত, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির অভ্যন্তরীণ সকল দাপ্তরিক কাজে মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কেবলমাত্র বৈদেশিক যোগাযোগ বা পত্রালাপে বিদেশি ভাষা ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি বাংলা ভাষাভাষী নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত জীবনাচারে দেশের অভ্যন্তরে অযথা বিদেশী শব্দ প্রয়োগ না করে বাংলা শব্দ প্রয়োগে অভ্যস্ত হতে হবে। বাংলা ভাষার উৎকর্ষতা সাধনে রাষ্ট্রযন্ত্র ও রাষ্ট্রের নাগরিক কেউই দায়িত্বের বাইরে নয়।