পরশ মির্জাঃ
বর্তমান যুগে দিবসের ছড়াছড়ি। মনে হয় বেশী দেরী নেই যখন প্রত্যেক দিনেই কোন না কোন অাজগুবি হাস্যকর দিবস না থাকবে। বিশেষ করে তরুন নির্ভর বিভিন্ন দিবস। যা তরুন সমাজকে গিলে খাওয়ানো হচ্ছে। ভালোবাসা দিবস থেকে চকলেট দিবস। অারো কত কি অাজগুবি দিবস। কিন্তুু কেন এসব দিবসের বেড়াজালে তরুন সমাজকে অাটকানো হচ্ছে?
এককথায় বলা যেতে পারে অাগামীর কান্ডারী তরুন সমাজকে সচেতন বিমূখ করে রাখার জন্যই এসব দিবসের ছড়াছড়ি। যে বয়সে তরুন ভাবতে শিখবে সমাজ নিয়ে, দেশ নিয়ে, সত্যন্যায় নিয়ে, মানবজীবন নিয়ে। যে বয়সে তরুন সমাজ নিজেদেরকে তৈরি করবে অাগামী দিনের জন্য, সমাজ গড়ার জন্য, দেশ গড়ার জন্য। সে বয়সেই তাদেরকে সুকৌশলে অাজগুবি সব দিবসে অাচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে। যাতে তরুন সমাজ দিবস নিয়ে মত্ত থাকে। ন্যায় অন্যায় দেখার ফুসরত না পায়। প্রতিবাদী না হয়। সচেতন ও প্রতিবাদী হলে দেশী বিদেশী অপচক্রের অপকর্ম ও শোষন করতে বড়ই সমস্যা। তাই ডুবে থাক তরুন সমাজ দিবসের মোহে।
কালসাপ হয়ে দেখা দিয়েছে তরুন নির্ভর বিভিন্ন অাজগুবি দিবস। ছোবল মারছে তরুন প্রজন্মকে অত্যন্ত সুচতুর চালে। অসচেতন দৃষ্টিভঙ্গির বিষ ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের মগজে। যাতে তারা সমাজ সচেতন না হয়। দেশ নিয়ে না ভাবে। অাগামীর জন্য সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বেড়ে না উঠে। শুভ চিন্তাভাবনা নিয়ে বেড়ে উঠলে অপকর্ম, শোষন ও অপব্যবসায় বড্ড সমস্যা। তাই ডুবে থাক তরুন সমাজ দিবসের অন্ধকারে।
পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় মুনাফা অর্জনই মূখ্য উদ্দেশ্য। তা যে কোন উপায়েই হোক না কেন। অানুষ্ঠানিক হইহুল্লুড় জাতীয় রঙ্গরসের দিবস যত পুক্ত হবে মুনাফাটাও তত বাড়বে। পুঁজিবাদের মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্রও বিস্তৃত হবে। পুঁজিবাদ এটা ভালো করেই জানে যে, হইহুল্লুড় জাতীয় দিবসে তরুন সমাজই মজে বেশি এবং তা সহজাতগতভাবেই। এজন্য অাজ সুকৌশলে তরুননির্ভর দিবস বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে কোন না কোন ইতিহাসের ছুঁতোয়। তরুন সমাজও বিভ্রান্ত হয়ে লুফে নিচ্ছে এর প্রাসঙ্গিকতা না ভেবেই।
তরুন সমাজকে এড়িয়ে চলা উচিত এসব অাজগুবি দিবস। যে অাজগুবি দিবসগুলো শুধু অসচেতনভাবে বেড়ে উঠতে পেছনের দিকে নিয়ে যায়। অাচ্ছন্ন করে ফেলে ভোগবাদে। তরুন সমাজ নিজেদেরকে সচেতনতার সাথে গড়ে তুলবে নিজের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য। ভাববে নিজের কথা, সমাজের কথা, দেশের কথা। ফলে পাবে সে সুন্দর অাগামী। যে অাগামী শুধুই এগিয়ে যাওয়ার। অার এই এগিয়ে যাওয়ার পথ মানবতাকেন্দ্রিক, সমতাকেন্দ্রিক, সমষ্টিকেন্দ্রিক।